You are currently viewing শরীয়তপুরের বিখ্যাত বিবিখানা পিঠা- একটি ঐতিহাসিক রেসিপি!
শরীয়তপুরের বিখ্যাত বিবিখানা পিঠা

শরীয়তপুরের বিখ্যাত বিবিখানা পিঠা- একটি ঐতিহাসিক রেসিপি!

শরীয়তপুরের বিখ্যাত বিবিখানা পিঠা কেবলমাত্র একটি মিষ্টান্ন নয়, এটি স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতীক। এর স্বাদ এবং ঐতিহ্যবাহী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি শরীয়তপুরের মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।  বিবিখানা পিঠা তৈরির প্রক্রিয়া প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে এবং এটি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সুদৃঢ় বন্ধন সৃষ্টি করে। 

পিঠার সুবাসিত গন্ধ এবং মিষ্টি স্বাদ যেমন পরিবারের সকলকে একত্র করে, তেমনি স্থানীয় উৎসব এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে এই পিঠা একটি আবশ্যিক উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। সারা বাংলাদেশে সুপরিচিত এই পিঠা সম্পর্কে কে না জানতে চায়। তবে চলুন আজকে আমরা জেনে আসি শরীয়তপুরের বিখ্যাত বিবিখানা পিঠা এর ইতিহাস এবং এর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে। 

বিবিখানা পিঠার উৎস এবং ইতিহাস

শরীয়তপুরের ঐতিহ্যবাহী বিবিখানা পিঠা একটি বিখ্যাত মিষ্টান্ন, যা প্রাচীনকাল থেকে স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয়। এর উৎপত্তি সম্পর্কে নানা কিংবদন্তি প্রচলিত থাকলেও, সাধারণ ধারণা হলো, এই পিঠা প্রথম তৈরি হয়েছিল শরীয়তপুরের জমিদার বাড়ির নারীদের হাত ধরে। তারা তাদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের জন্য এই পিঠা তৈরি করতেন। ধীরে ধীরে এর স্বাদ ও জনপ্রিয়তা স্থানীয় মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। 

শরীয়তপুরের ঐতিহ্যবাহী বিবিখানা পিঠা স্থানীয় মানুষের কাছে এক বিশেষ গৌরবের বিষয়। এই পিঠা মূলত চালের গুঁড়া, নারকেল, খেজুরের গুড় এবং নানা ধরনের মসলা দিয়ে তৈরি করা হয়। বিবিখানা পিঠা শুধুমাত্র একটি খাবার নয়, বরং এটি স্থানীয় সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। পিঠাটি তার মোলায়েম স্বাদ এবং সুগন্ধের জন্য প্রসিদ্ধ, যা স্থানীয় উৎসব ও অনুষ্ঠানগুলোর আবশ্যিক উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পিঠা সাধারণত পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে তৈরি করা হয়, যা মানুষকে একত্রিত করে এবং সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করে।

বিবিখানা পিঠার ইতিহাস বহু শতাব্দী পুরনো এবং এটি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত। কথিত আছে, এই পিঠা প্রথম তৈরি হয় জমিদার বাড়ির নারীদের হাত ধরে, যেখান থেকে এটি ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মায়েরা তাঁদের সন্তানদের এই পিঠা তৈরির কৌশল শিখিয়ে আসছেন, যা একটি জীবন্ত ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। 

এই পিঠার রেসিপি এবং তৈরির প্রক্রিয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হলেও, এর মৌলিকতা আজও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। শরীয়তপুরের বিবিখানা পিঠা কেবল খাদ্য নয়, এটি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং পারিবারিক বন্ধনের প্রতীক, যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

শরীয়তপুরের বিবিখানা পিঠার প্রস্তুত প্রণালী

বিবিখানা পিঠা, শরীয়তপুরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন, তার সুগন্ধী ও স্বাদের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই পিঠা তৈরি করতে কিছু সাধারণ উপকরণ প্রয়োজন হয়, তবে এর প্রস্তুতি প্রক্রিয়া বেশ যত্নের। এখানে বিবিখানা পিঠার বিশদ প্রস্তুত প্রণালী দেওয়া হলো।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

  • চালের গুঁড়া – ২ কাপ
  • তাজা নারকেল কুঁচি – ১ কাপ
  • খেজুরের গুড় – ১ কাপ (স্বাদ অনুযায়ী কম-বেশি করা যেতে পারে)
  • দুধ – ১ কাপ
  • এলাচ গুঁড়া – ১ চা চামচ
  • দারচিনি গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
  • লবণ – এক চিমটি
  • ঘি বা তেল – পিঠা ভাজার জন্য
  • পানি – প্রয়োজনে

প্রস্তুত প্রণালী

নিছে প্রস্তুতপ্রণালি বর্ণনা কোরা হলো। 

চালের গুঁড়া ভাজা

প্রথমে একটি শুকনো কড়াইয়ে চালের গুঁড়া হালকা আঁচে ভাজুন। ভাজা চালের গুঁড়ায় সুবাস ছড়ানো শুরু করলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করতে দিন। ভাজা গুঁড়া পিঠার স্বাদে গভীরতা যোগ করে।

নারকেল ও গুড়ের মিশ্রণ

আরেকটি কড়াইয়ে তাজা নারকেল কুঁচি দিয়ে সামান্য ভেজে নিন। এরপর এতে খেজুরের গুড় যোগ করুন। মাঝারি আঁচে নেড়ে নেড়ে গুড় গলিয়ে নারকেলের সঙ্গে মেশান। মিশ্রণটি ঘন ও আঠালো হয়ে এলে তাতে এলাচ গুঁড়া, দারচিনি গুঁড়া, এবং এক চিমটি লবণ দিন। ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রণটি নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন।

খামির তৈরি

একটি বড় পাত্রে ভাজা চালের গুঁড়া নিন। এতে ঠাণ্ডা নারকেল-গুড়ের মিশ্রণ যোগ করুন। সবকিছু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। অল্প অল্প করে দুধ যোগ করে একটি নরম খামির তৈরি করুন। খামির যেন না খুব বেশি শক্ত না হয়, আবার না খুব বেশি নরম হয়। প্রয়োজনে পানি ব্যবহার করতে পারেন।

পিঠা তৈরি

খামির থেকে ছোট ছোট অংশ নিয়ে হাতের তালুতে গোল বা চ্যাপ্টা আকারে পিঠা তৈরি করুন। পিঠাগুলো সুন্দর ও সমান হওয়া উচিত, যাতে ভাজার সময় সঠিকভাবে সেঁকে যায়।

ভাজার প্রক্রিয়া

একটি গভীর কড়াইয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘি বা তেল গরম করুন। তেল গরম হয়ে এলে একেক করে পিঠাগুলো তেলে ছাড়ুন। মাঝারি আঁচে পিঠাগুলো সোনালি বাদামি রঙ হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। একবারে বেশি পিঠা না ভাজা ভালো, কারণ এতে সেগুলো সঠিকভাবে ভাজা হতে পারে না। ভাজা পিঠাগুলো তেল থেকে উঠিয়ে কিচেন টিস্যুতে রাখুন, যাতে অতিরিক্ত তেল শুষে যায়।

পরিবেশন

বিবিখানা পিঠা গরম গরম পরিবেশন করুন। এটি সাধারণত চায়ের সাথে বিশেষভাবে উপভোগ করা হয়। অতিথি আপ্যায়ন বা পারিবারিক অনুষ্ঠানে এই পিঠা একটি আকর্ষণীয় মিষ্টান্ন হিসেবে সকলের মন জয় করে নেয়।

পরামর্শ 

  • মিষ্টতার মাত্রা: খেজুরের গুড়ের মিষ্টতা আপনার পছন্দমতো কম-বেশি করতে পারেন। মিষ্টির মাত্রা সামঞ্জস্য করার জন্য চাইলে চিনিও যোগ করা যায়।
  • নারকেলের পরিমাণ: নারকেলের পরিমাণ কম-বেশি করে পিঠার স্বাদে পরিবর্তন আনতে পারেন।
  • সংরক্ষণ: পিঠাগুলো ঠাণ্ডা হওয়ার পর একটি বাতাস বন্ধ পাত্রে সংরক্ষণ করলে কয়েক দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।

শরীয়তপুরের বিবিখানা পিঠার বিশেষ বৈশিষ্ট্য

বিবিখানা পিঠা শরীয়তপুরের একটি অনন্য মিষ্টান্ন, যা তার বিশেষ স্বাদ ও ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এর কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য যা তাকে অন্য পিঠা থেকে স্বতন্ত্র করেছে:

ঐতিহ্যবাহী রেসিপি

বিবিখানা পিঠার রেসিপি শতাব্দী প্রাচীন। এটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পরিবারের মা-দাদিদের মাধ্যমে সংরক্ষিত হয়েছে। প্রতিটি পরিবার নিজস্ব কিছু উপাদান যোগ করে এর স্বাদকে আরও অনন্য করে তুলেছে। এই ঐতিহ্যবাহী পিঠার প্রস্তুতি স্থানীয় সাংস্কৃতিক এবং পারিবারিক বন্ধনের প্রতীক।

অনন্য সুগন্ধ ও স্বাদ

খেজুরের গুড় এবং তাজা নারকেলের মিশ্রণে তৈরি এই পিঠার সুগন্ধ অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এর স্বাদ মিষ্টি, কোমল এবং মোলায়েম, যা খাওয়ার সময় মুখে মেখে যায়। এলাচ এবং দারচিনির মতো মসলা যোগ করার ফলে পিঠার সুগন্ধ ও স্বাদে বিশেষ মাত্রা যোগ হয়।

বিশেষ উপকরণ

বিবিখানা পিঠার উপকরণগুলো সহজলভ্য হলেও এর ব্যবহার এবং সমন্বয় পিঠাকে বিশেষ করে তোলে। চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড়, নারকেল, দুধ, এবং বিভিন্ন মসলা একসঙ্গে মিশ্রিত করে একটি সমৃদ্ধ স্বাদ তৈরি করে। খেজুরের গুড়ের মিষ্টতা এবং নারকেলের ক্রাঞ্চি টেক্সচার পিঠাকে আরও লোভনীয় করে তোলে।

মিষ্টতার ভারসাম্য

পিঠার মিষ্টতার পরিমাণ খুব যত্নসহকারে নিয়ন্ত্রিত হয়। খেজুরের গুড়ের প্রাকৃতিক মিষ্টতা এবং নারকেলের সঙ্গে এর সমন্বয়, পিঠাকে অতিরিক্ত মিষ্টি বা কম মিষ্টি না করে বরং একদম সঠিক মিষ্টতার ভারসাম্য বজায় রাখে।

পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন

বিবিখানা পিঠা শুধুমাত্র একটি মিষ্টান্ন নয়, এটি পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনের প্রতীক। উৎসব, বিবাহ, এবং অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে এই পিঠা তৈরি করা হয়, যা পরিবারের সদস্যদের একত্রে কাজ করতে এবং একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাতে উদ্বুদ্ধ করে। এই পিঠা তৈরির প্রক্রিয়া প্রাচীনকাল থেকে পরিবারগুলোর মধ্যে একটি মিলনমেলার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

উৎসবের আবশ্যিক অংশ

বিবিখানা পিঠা শরীয়তপুরের বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ গুরুত্ব পায়। ঈদ, পহেলা বৈশাখ, এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই পিঠা একটি আবশ্যিক উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। অতিথি আপ্যায়নে এবং পরিবারের সদস্যদের আনন্দে ভাগাভাগি করার জন্য এই পিঠা অপরিহার্য।

বহুস্তরীয় স্বাদ

বিবিখানা পিঠা খেতে শুধু সুস্বাদু নয়, বরং এর প্রতিটি স্তরে বিভিন্ন উপকরণের সমন্বয়ে তৈরি একাধিক স্বাদ পাওয়া যায়। প্রথমে নারকেল ও গুড়ের মিষ্টতা, পরে এলাচ ও দারচিনির মসলাদার সুগন্ধ, যা খাওয়ার সময় দারুণ আনন্দদায়ক।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে শরীয়তপুরের বিবিখানা পিঠা

বর্তমানে বিবিখানা পিঠা শুধু একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন নয়, বরং এটি শরীয়তপুরের সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই আধুনিক যুগেও শরীয়তপুরের বিবিখানা পিঠা তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। বর্তমানে এর প্রচার এবং প্রসার আরো বহুগুনে বেড়ে গেছে। এর মূল কারণ ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা। এর কিছু সমসাময়িক দিক উল্লেখ করা হলো:

বাড়তি জনপ্রিয়তা

বিবিখানা পিঠা কেবল শরীয়তপুরেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সারাদেশে এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন মেলা, স্থানীয় বাজার, এবং উৎসবে এটি বিশেষভাবে প্রচলিত।

বাণিজ্যিকীকরণ

বিবিখানা পিঠা এখন অনেক মিষ্টির দোকান ও রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায়। অনেকে ঘরে তৈরি করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বিক্রি করছেন, যা এই পিঠার বাজারকে আরও প্রসারিত করেছে।

মুন্সিগঞ্জ ভাগ্যকুলের মিষ্টির ইতিহাস, কেন বিখ্যাত ও রেসিপি

সংস্কৃতি সংরক্ষণ

নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই পিঠার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। তরুণরা তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই পিঠা তৈরি শিখছে, যা সাংস্কৃতিক সংরক্ষণে ভূমিকা রাখছে।

আধুনিক রেসিপি

বিবিখানা পিঠার রেসিপিতে কিছু আধুনিক উপকরণের সংযোজন দেখা যাচ্ছে, যেমন: চকলেট, কিশমিশ, বা বিভিন্ন বাদাম, যা এর স্বাদে নতুনত্ব যোগ করছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার

বিবিখানা পিঠা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। ভিডিও রেসিপি এবং ব্লগের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পিঠার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপসংহার

বিবিখানা পিঠা শুধুমাত্র একটি মিষ্টান্ন নয়, এটি শরীয়তপুরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক। এর প্রস্তুতি ও জনপ্রিয়তা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য এবং গর্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর স্বাদ, সুগন্ধ এবং তৈরি প্রক্রিয়া শুধু পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ায় না, বরং নতুন প্রজন্মের মধ্যে ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার অনুপ্রেরণা জোগায়। 

বিবিখানা পিঠা আজও শরীয়তপুরের গর্ব এবং এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে অম্লান। এই পিঠার স্বাদ ও গন্ধ শরীয়তপুরের ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছেও পৌঁছে দেয়, যা তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের ধারণা জাগ্রত করে।

Bornali Akter Borno

Bornali Akter Borno is a passionate food enthusiast and entrepreneur. From an early age, her love for culinary exploration led her to experiment with flavors and ingredients, ultimately inspiring her to work with Binni Food, an e-commerce brand dedicated to offering premium quality Organic Food and delectable treats to food enthusiasts in Bangladesh. Bornali's relentless pursuit of flavor and commitment to excellence have earned her recognition in the culinary world. Her journey is a testament to the power of passion and perseverance, showcasing how dedication to one's craft can lead to entrepreneurial success and culinary innovation.