You are currently viewing সরিষার তেলের পুষ্টিগুন – Binni Food
সরিষার তেলের পুষ্টিগুন

সরিষার তেলের পুষ্টিগুন – Binni Food

সরিষার তেলের পুষ্টিগুন ও এই তেলের ব্যবহারের কথা চিন্তা করলে আমরা অনেকেই বুঝি ভর্তা বানানো ও বিভিন্ন প্রকার মুখরোচক মাখার খাবার। আমরা অনেকেই জানি না যে এই তেলের পুষ্টিগুন কি বা কেমন। নিয়মিত রান্না করা খাবার থেকে শুরু করে প্রতিদিনের অনেক কাজে ব্যবহার করা হয় এই তেল। যা প্রতিদিনে সরিষার তেলে রান্না করা খাবারে খেলে অনেক রোগ থেকে দূরে  করে। সরিষার তেলের অসাধারণ কিছু গুণ রয়েছে যে পুষ্টিগুন সম্পর্কে আজ জানব।

নানা গুণের সরিষার তেল

সরিষার তেলের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলতে গেলে অনেক ধরনের পুষ্টি গুন বিদ্যমান। ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, আলফা ওমেগা থ্রি এই সরিষার তেলে রয়েছে। এছাড়াও এই তেলে আয়রন, ম্যাংগানিজ, আলফা ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড, এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। যে কারনেই এই উপাদানগুলো যেকোনো মানুষের সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরী।

সরিষার তেলে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল গুন বিদ্যমান। ফলে এটি শরীরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। বিশেষ করে ডাইজেস্টিভ সিস্টেম এবং ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন থেকে দূরে রাখে।

ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, আলফা ওমেগা থ্রি


সরিষার তেলে থাকা ওমেগা থ্রি এবং ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড হার্ট অ্যাটাক থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস, ইনসুলিন, ডিপ্রেশন, রেজিস্ট্যান্স,ক্যানসার ইত্যাদি কঠিন সব রোগ থেকে দূরে রাখে এবং নিয়মিত সরিষার তেল খেলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে যায়।
 
এই তেলে দুই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে- ওলিক অ্যাসিড এবং লিনোলিক অ্যাসিড। আর আমরা সবাই জানি যে এই দুটি ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের যত্নে অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে। ক্ষুধাবোধ না হলে বা এই জাতীয় সমস্যা থাকলে নিয়মিত সরিষার তেলে রান্না করা খাবার খেতে পারেন। এটি রুচি বাড়াবে এবং যদি গ্যাস্টিক সমস্যা জনিত সমস্যা থাকলে তা অনেকাংশে কমিয়ে দিবে।

সরিষার তেলে মনোস্যাচুরেটেড ও পলিঅনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে।

প্রতি ১ চা চামচ সরিষার তেলে ১২৬ ক্যালরি থাকে। এছাড়াও প্রতি ১০০ গ্রামে স্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রায় ১২ মিঃ গ্রাম,পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রায় ২১ মিঃ গ্রাম এবং মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রায় ৫৯ মিঃ গ্রাম থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম সরিষার তেলে ৮৮৪ ক্যালোরি থাকে।

সরিষার তেলের স্মোক পয়েন্ট

যে তেলের স্মোক পয়েন্ট বেশি, সেটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশি নিরাপদ বলেও মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞরা।  তেলের গুণাগুণ হারাতে শুরু করে স্মোক পয়েন্টে পৌঁছালে এবং বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। এ কারণে তেল স্মোক পয়েন্টে পৌঁছানোর আগেই তাতে রান্না করা স্বাস্থ্যসম্মত এবং ঐ তেল একাধিবার ব্যবহার করা সম্ভব। সেই অনুযায়ী যদি সরিষার তেলের স্মোক পয়েন্ট চিন্তা করা যায় তবে এটি স্বাস্থ্যসম্মত। 

মাস্টারক্লাস ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সরিষার তেলের স্মোক পয়েন্ট হলো ২৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। আর যদি অন্যান্য তেলের  স্মোক পয়েন্ট কত তা চিন্তা করা যায় তবে, পরিশোধিত সূর্যমুখীর তেলের ২২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, সয়াবিনের স্মোক পয়েন্ট ২৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, পরিশোধিত অলিভ অয়েলের ২৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং ঘির স্মোক পয়েন্ট হলো ২৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট। সে দিক থেকে চিন্তা করলে সরিষার তেল অন্য সকল তেলের চাইতে আমাদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ও উপকারী। 

গ্লুকোসিনোলেট (Glucosinolate) নামক উপাদান থাকে সরিষার তেলে। যা অ্যান্টিকারসিনোজেনিক উপাদান হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও এই তেলে লুকোসুনোলেট ও মিরোশিস নামক উপাদান রয়েছে। 

এক গবেষণায় দেখা গেছে, সরিষার তেলে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ফোলেট, পাইরিডক্সিনও পলিকুইননের মতো ভিটামিন ও রয়েছে।

সরিষার তেলে পুষ্টি উপাদান, প্রচুর ভিটামিন, সিলেনিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম, খনিজ, মিনারেল ও বিশেষ করে উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। তাই প্রতিদিনের রান্না থেকে শুরু করে ত্বক ও চুলের যত্নে খাটি সরিষার তেল বা ঘানি ভাংগা সরিষার তেল নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন। তাই এটা বলাই যায় সরিষার তেলে প্রতি ফোঁটায় বিশদ্ধতার ছোঁয়া রয়েছে যা আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও উপকারি।

Leave a Reply