বাজারের অধিকাংশ গুড়ে হাইড্রোজ নামক বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকে। তা আমরা না জেনেই সোনালি, হালকা লাল, চকচকে, উজ্জ্বল সাদাটে গুড় দেখে সবাই আকৃষ্ট হই। অসাধু বাব্যসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় গুড়ের রঙ এবং হাইড্রোজেন দিয়ে আকর্ষণীয় করে তোলে। এই হাইড্রোজ দেয়া গুড় স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতিদিন ন্যূনতম ৩৫.৬২ গ্রাম, গুড়-চিনি খাওয়া উচিত আমাদের। এই হিসেবে দেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য বার্ষিক প্রায় ২০ লাখ টন চিনি-গুড় উৎপাদন করা প্রয়োজন। কিন্তু দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩.৫-৪ লাখ টন গুড় ও ১-১.৫ লাখ টন চিনি উৎপাদন হয়ে থাকে যা প্রয়োজন এর তুলনায় অনেক কম । যে কারণে অসাধু বাব্যসায়ীরা নানান রকমের কেমিক্যাল ব্যবহার করে তৈরি করছে গুড়। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আমাদের দেশে চিনির চেয়ে গুড়ে পুষ্টি বেশি। গুড়ে সুক্রোজ, আমিষ, চর্বি, ক্যালসিয়াম, ফসফেট, ক্যারোটিন, রাইবোফ্ল্যাবিন ও নিয়াসিন থাকে। চিনিতে থাকে শুধু সুক্রোজ ও সামান্য আয়রণ।
আখের গুড় প্রস্তুত প্রনালী
উৎপাদিত আখ সংগ্রহ করে তা থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় রস বের করে তা একটি পাত্রে ছেঁকে নেওয়া হয়। পরে তা চুল্লিতে জ্বাল দেওয়ার মাধ্যমে রস থেকে জলীয় অংশ বাষ্প হয়ে যায়। ক্রমাগতও জ্বাল দেওয়ার ফলে ধীরে ধীরে রসের রঙ লালচে হয় এবং রস এ টান টান ভাব দেখা যায়। এরপর উত্তপ্ত রস শীতল করার মাধ্যমে গুড় পাওয়া যায়। এই রস কে গুড় না বানিয়ে চিনিও বানানো যায় তবে গুড় চিনির চেয়ে মিষ্টি কম হলেও পুষ্টিগুণে এগিয়ে থাকে। এইটা হচ্ছে গুড় বানানর সনাতন পদ্ধতি।
আখের গুড় এর উপকারিতা
গুড় একটি দুর্দান্ত মিষ্টির উৎস, যা প্রচুর গুণাবলি ও স্বাস্থ্য উপকারিতায় ভরপুর। আসুন জেনে নেওয়া যাক গুড়ের কিছু প্রমান ভিত্তিক উপকারিতা:
- গুড়ে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক এবং ফসফরাসের মত উপাদান আছে যা পুষ্টিগুণের নিশ্চয়তা দেয়।
- গুড়ে একটি বিষনাশক প্রভাব আছে, কাজেই গুড় শরীরের বিষক্রিয়া দূর করে এবং রক্ত শোধন করে থাকে।
- এতে ভালো পরিমানে মাঙ্গানীজ থাকে। যার ফলে এটি মস্তিষ্কের ক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে।
- গুড় ওজন কমাতে সহায়তা করে।
- গুড়ের উপকারিতার মধ্যে রয়েছে ফুস্ফুসের কার্যক্ষমতা উন্নতি করন।
- হাঁপানির রোগীদেরকে চিনির পরিবর্তে গুড় খাওয়ানো যায়।
- এছারাও গুড় অনেক দিন রেখে খাওয়া যায় বলে চিনির বিপরিতে গুড় খাওয়া উত্তম।
আসল গুড়ের দ্বারা যেমন অনেক উপকারিতা পাওয়া সম্ভব তেমনি নকল গুড় খেলে এর বিপরিতে হতে পারে। তাই গুড় কেনার সময় অবশ্যই কিছু বিষয় বিবেচনা করে খাটি খাবার খাওয়া উচিত।
আখের গুড় সংরক্ষন পদ্ধতি
গুড় বায়ুরোধী প্যাকেট বা পাত্রে সংরক্ষণ করলে অনেক দিন ভালো থাকে। অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা রাখা যাবে না। শীতকালে ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন হয় না। তবে নরম, পাতলা কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখলে ভালো থাকে অনেকদিন।
চাইলে প্লাস্টিকের বয়ামে গুড় রাখা যায়। এটা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কেননা, কাচ বা সিলভারের পাত্রে গুড়ের স্বাদ-ঘ্রাণ অনেকদিন পর্যন্ত অক্ষুণ্ণ থাকে।
বিন্নি ফুডের আখের গুড় কেন সেরা?
বিন্নিফুডের আখের গুড় সম্পূর্ন কৃত্রিম চিনি, রঞ্জক পদার্থ, কেমিক্যাল, হাইড্রোজ, ফিটকিরি সহ কোন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ মুক্ত। তাই খাটি ও সঠিক ভালো মানের আখের গুড় পাওয়ার নিশ্চয়তা। যত্নসহকারে পুষ্টিগুণ বজায় রেখে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হয়ে থাকে। আমাদের গুড় ভালোভাবে সংরক্ষন করলে সারা বছর জুড়ে এর স্বাদ নেওয়া সম্ভব।