You are currently viewing কোন খাবার কত দিন ফ্রিজে রাখা যাবে ও কিছু সর্তকতা
কোন খাবার কত দিন ফ্রিজে রাখা যাবে

কোন খাবার কত দিন ফ্রিজে রাখা যাবে ও কিছু সর্তকতা

বর্তমানে ফ্রিজ ছাড়া যেনো আমরা চলতেই পারিনা। ফ্রিজে তো খাবার রাখি কিন্তু সঠিক নিয়মে সংরক্ষণ না করার কারণে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। রান্না করা খাবার ও কাচা খাবার ফ্রিজে রাখার নিয়ম আলাদা হয়ে থাকে। আবার অনেকেই হয়তো জানেন না, খাবার কতদিন পর্যন্ত রাখা যাবে। অনেকেই ফ্রিজে বছর জুরে খাবার সংরক্ষণ করে রাখেন। পরবর্তীতে খাবারে স্বাদ পাওয়া যায়না। এমনকি বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া জন্মে যা হয়তো আমরা খালি চোখে দেখতে পারিনা। ফলে আমরা না বুঝেই দিনের পর দিন এসকল খাবার গ্রহণ করে থাকি। 

সাধারণত সময় বাঁচানোর জন্য একটু বেশি পরিমাণে খাবার রান্নার করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে থাকি। তারপরে সারা সপ্তাহ জুড়ে খাবার চুলায় বা ওভেনে গরম করে খাই। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। আজকের আর্টিকেলে কোন খাবার কত দিন ফ্রিজে রাখা যাবে এই সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক- 

কোন খাবার কত দিন ফ্রিজে রাখা যাবে

ফ্রিজে খাবার রাখার যেমন কিছু পদ্ধতি রয়েছে, তেমনি এটি সংরক্ষণ করার একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। এই সময় অতিক্রম হলে খাবারের স্বাদ ও গুণাবলি হারিয়ে যায়। 

ভাত 

বাঙালির প্রধান খাদ্য ভাত যা আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকে। অনেক সময় বেঁচে যাওয়া ভাত আমরা ফ্রিজে রেখে দেই। পরবর্তীতে গরম করে খেয়ে থাকি। ভাতের মধ্যে স্টার্চের ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে। তাই বেঁচে যাওয়া ভাত ১ দিনের মধ্যে খেয়ে ফেলার চেষ্টা করবেন। 

খাবার কত দিন ফ্রিজে রাখা যাবে

সালাদ 

সবজি ও ফলমূল দিয়ে তৈরি করা হয় সালাদ। বেঁচে যাওয়া সালাদ ফ্রিজে রাখলে দ্রুত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সালাদ তৈরি করার ১-২ ঘন্টার মধ্যে খেয়ে ফেলা উচিত।  

ডাল  

অনেকেই কয়েকদিনের জন্য একবারে ডাল রান্না করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। ফ্রিজে সংরক্ষণের জন্য বায়ূরোধী বোয়ামে রাখতে হবে। যাতে কোনো বাতাস ভিতরে প্রবেশ করে না পারে। এতে ডাল ৩ দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে। এবং যতটুকু ডাল খাবেন সেইটুকু ডাল গরম করবেন। বাকী ডাল ফ্রিজেই রেখে দিবেন। 

সবজির তরকারি 

ফ্রিজে যদি সবজি তরকারি রাখতে চান তাহলে দুই দিনের মধ্যে সবজির তরকারি খেয়ে ফেলতে হবে। সর্বোচ্চ তিন দিন পর্যন্ত রাখা যাবে। এর বেশি কোনো ভাবে রাখা যাবে না। এতে তরকারি নষ্ট হয়ে যাবে।  

চিজ ও সস দিয়ে তৈরি খাবার 

স্পাইসি খাবার যেমন পাস্তা, নুডুলস, পিজ্জা ইত্যাদিতে চিজ বা সস ব্যবহার করা হয়। আর এই ধরণের খাবার রান্না করে ফ্রিজে রাখা উচিত না। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। 

রান্না করা মাছ মাংস  

বিশেষ করে মাংস রান্নার পরে বেঁচে যায় যা ফ্রিজে রেখে কয়েকদিন যাবৎ আমরা খেয়ে থাকি। কিন্তু রান্না করা মাছ মাংস ফ্রিজে দুই দিনের বেশি রাখা উচিত নয়। আবার অনেকেই রান্না করা মাছ মাংস আলাদা আলাদা বক্সে ডিপ ফ্রিজে রাখেন এভাবেও রাখা যাবে তবে ১৫ দিনের বেশি না রাখাটাই উত্তম। 

সুষম খাদ্য কি? এর গুরুত্ব ও সুষম খাবারের তালিকা

বাটা মশলা 

আদা রসুন বাটা প্রতিদিনের একটি ঝামেলার কাজ। তাই সারা মাসের জন্য ব্লেন্ডার করে রাখি আমরা। এক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী ১ সপ্তাহের জন্য আলাদা একটা ইয়ার টাইট বক্সে ফ্রিজে রাখা যেতে পারে। অন্যদিকে পরিমাণে বেশি বাটা মসলাগুলো অন্য আরেকটি এয়ার টাইট বক্সে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে। এভাবে দুই মাসের জন্য রাখা যেতে পারে। তবে স্বাদ ও ঘ্রাণ কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।

কাঁচা মাছ মাংস 

কাঁচা মাছ মাংস ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে। মাছ ভালো করে পরিষ্কার করে কেটে   লবন পানি দিয়ে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে পলিথিনে বেধে ডিপে রাখতে হবে। এভাবে দুই সপ্তাহ ভালো থাকবে। মুরগির মাংস ১ মাস পর্যন্ত, গরু ও খাসির মাংস তিন মাস পর্যন্ত ভালো থাকবে। 

ডিম 

প্রোটিনের একটি ভালো উৎস হলো ডিম। আর ডিম প্রিয় মানুষরা সাধারণত মাসের জন্য ডিম কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে থাকেন। আমাদের মধ্যে অধিকাংশই ডিম ফ্রিজে রাখার নিয়ম হয়তো জানেন না। ডিম বাজার থেকে কিনে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপরে আলতো করে মুছে ডিপ ফ্রিজে রাখা রাখতে হবে। অতিরিক্ত গরম না হলে ডিম ফ্রিজে এক মাস পর্যন্ত ভালো থাকবে। 

দুধ 

তরল দুধ গরমে কয়েক ঘন্টার মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। তাই দুধ জ্বাল দিয়ে দুই দিনের মতো সংরক্ষণ করা যাবে। ফ্রিজের নরমালে তরল দুধ ৫-৭ দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে। এবং ডিপে রাখলে ৩মাস পর্যন্ত ভালো থাকবে। তবে ‍দুধের পুষ্টিগুণ কমে যেতে পারে। পুরোপুরি পুষ্টি পেতে চাইলে ১ মাসের মধ্যে খেয়ে ফেলতে হবে। 

সসেজ 

বিভিন্ন রান্নার স্বাদ বাড়াতে সসেজ ব্যবহার করা হয়। এই ডিপ ফ্রিজে ১ সপ্তাহ পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যেতে পারে। 

ডিসের তরকারি 

রান্না করা ডিমের তরকারি যেমন ডিমের রেজালা, ডিম ভুনা ইত্যাদি একদিনের বেশি ফ্রিজে রাখা উচিত না। তাই রান্না করে খেয়ে ফেলাই উত্তম। 

মৌসুমী ফল 

সাধারণত মৌসুমী ফলের স্বাদ বেশি ধরে রাখার জন্য আমরা ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখি। ফ্রিজে ফল রাখলে তারাতারি নষ্ট হয়না কিন্তু পুষ্টিগুন কমে যায়। তবে ২-৩ দিনের বেশি ফ্রিজে না রাখাই ভালো।

আইসক্রিম ও প্যাকেটজাত ফ্রোজেন ফুড 

আইসক্রিম ও প্যাকেটজাত ফ্রোজেন ফুড যেমন সিঙ্গারা, সমুচা, রোল ইত্যাদি ফ্রিজে রাখার ব্যাপারে সর্তক হতে হবে। এগুলো ফ্রিজের ডিপ অংশে রাখতে হবে। এবং তাপমাত্রা হেরফের হলে এই ধরনের খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ঘি ও মাখন 

অনেকদিন ঘি ও মাখন ভালো রাখার জন্য ফ্রিজে রাখা যেতে পারে। তবে এয়ার টাইট পাত্রে রাখতে হবে। 

ফ্রিজে খাবার রাখার কিছু সর্তকতা

ফ্রিজে খাবার রাখার কিছু সর্তকতা  

কর্মব্যস্ততার কারণে অনেকের কাছে তিন বেলা রান্না করাটা বেশ কষ্টকর হয়ে যায়। এই রান্না থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে ফ্রিজের ওপর ভরসা রাখা ছাড়া আর উপায়ও থাকেনা। তবে অনেকেই জানেন না ফ্রিজে কতদিন খাবার রাখা যায়, ফ্রিজে খাবার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ঠিক নাকি ভুল। চলূন কিছু সর্তকতা জেনে নেওয়া যাক 

  • মাছ মাংস রান্নার আগে ডিপ ফ্রিজ থেকে বের করতে হবে। এরপরে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে রান্নার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু বাদে ফ্রিজে রাখতে পারেন। 
  • রান্না করার খাবার বারবার ফ্রিজ থেকে বের করা উচিত না। আলাদা পাত্রে অল্প অল্প করে রাখতে হবে। এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বের করে খাবার গরম করে খেতে হবে। 
  • রান্নার করা খাবার ফ্রিজে অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে। 
  • কাচা মাছ মাংস তরতারি ও রান্না করা তরকারী ফ্রিজের আলাদা তাকে রাখতে হবে। 

উপরোক্ত আলোচনায় কোন খাবার কত দিন ফ্রিজে রাখা যাবে, সময়কাল ও সর্তকতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু খাবার সংরক্ষণের জন্য আমরা ফ্রিজের ওপর অনেকটা নির্ভশীল রয়েছে পড়েছি। তাই ফ্রিজে খাবার রাখার সময় অবশ্যই সচেতন হতে হবে। ফ্রিজে বেশিদিন খাবার রাখলে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। তাই ফ্রিজ নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। 

Bornali Akter Borno

Bornali Akter Borno is a passionate food enthusiast and entrepreneur. From an early age, her love for culinary exploration led her to experiment with flavors and ingredients, ultimately inspiring her to work with Binni Food, an e-commerce brand dedicated to offering premium quality Organic Food and delectable treats to food enthusiasts in Bangladesh. Bornali's relentless pursuit of flavor and commitment to excellence have earned her recognition in the culinary world. Her journey is a testament to the power of passion and perseverance, showcasing how dedication to one's craft can lead to entrepreneurial success and culinary innovation.