You are currently viewing কিভাবে তৈরি করা হয় কুমড়ো বড়ি, রান্নার রেসিপি এবং উপকারিতা

কিভাবে তৈরি করা হয় কুমড়ো বড়ি, রান্নার রেসিপি এবং উপকারিতা

বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিম বঙ্গে কুমড়ো বড়ি বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার। এটি দেখতে যেমন সুন্দর ,খেতেও তেমন অতুলনীয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই খাবারের কদর সবচেয়ে বেশি। সঠিক ভাবে তৈরি এবং সংরক্ষন করলে এই কুমড়ো বড়ি আপনি সারা বছর খেতে পারবেন। তবে শীতকালে কুমরো বড়ির কদর বেড়ে যায় বহুগুনে। যাদের আদি বাসস্থল গ্রামে, তারা বেশ ভালো ভাবেই এই কুমড়ো বড়ির স্বাদ এবং তৈরি প্রসেস জেনে থাকেন। একটা সময় শীতকাল আসলেই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে শিতের পিঠা এবং কুমড়ো বড়ি তৈরির আয়োজনে মেতে থাকতো সবাই।

কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ শহরমুখি হওয়ার কারনে তাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছে বহুগুনে। ফলে ইচ্ছে থাকা সর্ত্বেও অনেকে এখন এই কুমড়ো বড়ির স্বাদ নিতে পারেন নাহ, অনেকের মাঝেই রয়েছে এই আক্ষেপ। বাজারে কুমড়ো বড়ি থাকলেও সেগুলো স্বাদে অথবা মানে সন্তুষ্টি দিতে পারে নাহ আমাদের। মন বারবার ছুটে যায়  সেই পুরনো দিনের মা’য়ের হাতের তৈরি কুমড়ো বড়ির দিকে।শিতের এই বাহারি সবজির ভীরে আপনি যদি পুরনো দিনের সেই মজাদার স্বাদের কুমড়ো বড়ির টেস্ট কে স্মতিচারন করে থাকেন, তাহলে আমি বলব বিন্নি ফুডের এই প্রিমিয়াম হোম মেইড কুমড়ো বড়ি ট্রাই করার জন্য।

শীতকালেই কেনো কুমড়ো বড়ির আধিক্য বেশী?

শীতকালেই কেনো কুমড়ো বড়ির আধিক্য বেশী?

কুমরো বড়ি তৈরির মূল উপকরন হলো মাসকালাই ডাল এবং কুমড়ো। কিন্তু এই উপকরন গুলো সারা বছর হাতের নাগালেই তো পাওয়া যায় তা সর্ত্বেও শুধু শীতকালেই কেন এই কুমড়ো বড়ি অধিক তৈরি হয় এমন প্রশ্ন কি কখনো কারো মনে বাসা বেধেছে? চলুন আজ আপনাদের এই বিষয় টা ক্লিয়ার করা যাক। মুলত সারা বছর মাসকালায় ডাল পাওয়া গেলেও নতুন ডাল পাওয়া যায় একমাত্র পৌষ-মাঘ  মাসে। অন্যদিকে শীতকালেই একদম গাছপাকা পরিপক্ত/ বাত্তি কুমড়ো পাওয়া যায়।

গরমের সময় অনেক চালকুমড়ো পাওয়া গেলেও এগুলো অধিকাংশ গাছপাকা বা বাত্তি হয় না। এরফলে এই কুমরো দিয়ে বড়ি তৈরি করলে বড়ি টক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং অনেক সময় বড়ি ফেটে যাওয়ার আশংকা থাকে। আবার শীতকাল মানেই নতুন নতুন সবজির সমারহ। আর শাক সবজির সাথেঈ মূলত এই বড়ি খেতে বেশি মজাদার । তাই শীত মৌসুমেই এই বড়ি বেশি মাননসই।

যেই ৫ টি কারনে আমাদের কুমড়ো বড়ি সেরা

  • কুমড়ো বড়ি তৈরির মুল উপাদান হলো মাশকালাই ডাল এবং চাল কুমড়া। আমরা সর্বপ্রথম ভালো মানের মাশকালায় ডাল নির্বাচন করা থাকি, সেই সাথে গাছের সেরা পরিপক্ত চালকুমড়া দিয়ে এই বড়া তৈরি করি।
  • মাশকালায় ডাল পাটা/ বাটুনি তে মিহি ভাবে পিষে যেই বড়া বানানো হয় এটার স্বাদ সবয়েছে বেশী। প্রাচীনকালে ঠিক এভাবেঈ এই বড়ি গুলো তৈরি করা হতো। বর্তমানে আধুনিকতার ছোয়াতে এখন শিলপাটা কেউ ব্যবহার করে না বললেই চলে। তবে কিছু খাবারে গ্রামীন ছোয়া বেশ ভালো লাগে। তাই আমাদের এই কুমড়ো বড়ি আমরা সম্পূর্ন সনাতন পদ্ধতিতে অর্থাৎ শিলপাটায় মিহি করে বেটে নিয়ে এই বড়া গুলো তৈরি করা হয়।
  • বাজারের ভেজাল মীশ্রিত বড়ি তে মাশকালায় ডালের পরিবর্তে আরো বেশ কিছু কমদামি ডাল ব্যবহার করা হয় এমনকি অনেকে বেসন , এরারুট কিংবা আটার ব্যবহার ও করে থাকে।কিন্তু আমাদের এই কুমড়ো বড়ি ভেজাল্মুক্ত। শুধু মাশকালায় ডাল এবং কুমড়া দিয়েই এটি বড়ি তৈরি করা হয়েছে এবং যেহেতু হাতে বেটে এই বড়ি তৈরি করা হয় তাই এটি দেখতে কিছুটা অমৃসন।
  • বাজারে কিনতে পাওয়া বড়ি রান্নার পরে ফুলতে চায় নাহ। আর কুমড়ো বড়ি ঠিকমতো না ফুললে এটি খেতেও মজা লাগে নাহ ।অন্যদিকে অনেক সময় অপরিপক্ক কুমড়ো ব্যবহার করার ফলে কুমড়ো বড়ি খেতে নোনটা মনে হয় আবার অনেক অসাধু ব্যবসায়ি কুমড়োর বদলে কাচা পেপে, মূলা ও বাধাকপি ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু শুধু মাত্র মাশকলায় ডাল এবং কুমড়ো বড়া দিয়ে আমাদের হোম মেইড তৈরি এই কুমড়ো বড়ি রান্নার পরে দ্বিগুন ফুলে উঠবে,সেই সাথে এতে কোনো রকম নোনটা বা তেতো ভাব থাকবে নাহ।
  • কুমড়ো বড়ি তৈরি থাকে শুরু করে প্যাকেজিং পর্যন্ত আমরা সর্বোচ্চ কোয়ালিটি মেইনটেইন করে থাকি,তাই আপনি পাবেন ১০০% ভেজাল্মুক্ত ও সুস্বাদু কুমড়ো বড়ির নিশ্চয়তা।

কুমড়ো বড়ির উপকারিতা

  • স্বাস্থ্যবিধ দের মতে কুমরো বড়ি আমাদের হজম শক্রি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • এছাড়া বড়ি তে ব্যবহার করা কুমড়োই রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা এবং ফাইবার যা আমাদের শরীরের জণ্য অনেক উপকারি।
  • কুমড়ো বড়ি আমাদের রোগ জীবানুর প্রকোপ থেকে বাচতে সাহায্য করে।
  • কুমড়ো বড়ি রুচি বৃদ্ধি তেও সাহায্য করে থাকে।
  • স্নায়ুবিধ দূর্বলতা, সিজোফ্রেনিয়া, হিস্ত্রিরিয়ার মতো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

কীভাবে তৈরী হয় বিন্নি ফুডের সেরা কুমড়ো বড়ি?

বিন্নি ফুড মানেই স্বাস্থ্যকর এবং মানসম্মত খাবারের নিশ্চয়তা। তাই আমাদের প্রতিটি প্রডাক্ট আমরা খুবই যত্ন সহকারে নিজস্ব তত্বাবধানে তৈরি করে থাকি। কুমড়ো বড়ির ক্ষেত্রেও একই প্রসেস মেনে চলা হয়। কুমড়ো বড়ি তৈরির জন্য প্রথমে বাজারের সেরা মানের মাসকালাই ডাল সংগ্রহ করা হয় যেটাকে অনেকে বিঊলির ডাল ও বলে থাকেন। এরপর গ্রামের চাষিদের দের থেকে সেরা মানের পরিপক্ত চালকুমড়ো সংগ্রহ  করা হয়। কুমড়ো বড়ির আসল স্বাদ টায় এই কুমড়োর উপরে নির্ভর করে। পাকা বা পরিপক্ত কুমড়ো ছাড়া বড়ি তৈরি করলে সেই বড়ির আসল স্বাদ পাওয়া যায় নাহ। এরপর মাসকালায় ডাল গুলোকে খুব ভালো ভাবে ধুয়ে নিয়ে ৬/৭ ঘন্টার জন্য  পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় পরবর্তিতে তা সুন্দর ভাবে শিল পাটায় বেটে নেওয়া হয়, এতে করে ডালের ঘনত্ব টা ভালো থাকে।এরপর চালকুমরো গুলোকে ভালো পরিষ্কার করে নিয়ে মাঝ বরাবর কেটে এর মাঝে থেকে কুমড় বিচি এবং বাকি হাবাজাবা গুলো বের করে নেওয়া হয়। এই পর্যায়ে চাল্কুমড়ো গুলো মিহি করে কেটে নিয়ে পুনরায় পানিতে ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরানো হয়।

এখানে মাথায় রাখতে হবে পরিপক্ত চালকুমড়ো কিছুটা টক ভাব হয়ে থাকে। তাই ভালো ভাবে এটিকে পানিতে ধুয়ে নেওয়া হয় যেনো টক ভাব টা কমে যায়। কুমড়ো কুচি গুলো ধুয়ে নিয়ে এগুলোকেও ডালের মতো পাটায় পিষে নেওয়া হয়। ব্যাস ডাল এবং কুমড়ো গুলো রেডি হয়ে গেলে ডালঃকুমড়ো (১ঃ১) অনুপাতে মিক্সড করা হয়। এই ডাল এবং কুমড়ো মিশ্রন সময় নিয়ে হাত দিয়ে মিক্সড করতে হবে, একটা সময় দেখা  যাবে মিশ্রন টা থেকে ফেনার মতো দেখা যাচ্ছে তখন বুঝে নিতে হবে এটি বড়ি তৈরির জণ্য রেডি। স্বাদ বাড়ানোর জণ্য বড়ির মিশ্রনে সামান্য লবন এবং কালিজিরা ব্যবহার করা হয়।এরপর পরিষ্কার সুতি কাপড়ে মিশ্রন গুলোকে হাতের সাহায্যে বড়ার শেইপ দেওয়া হয় এবং রোদে শুকানো হয়। সাধারনত কড়া রোদে ৩ দিনেই বড়া গুলো তৈরি হয়ে যায়।

কুমড়ো বড়ি যেভাবে রান্নায় খাওয়া যায়

কুমড়ো বড়ি যেভাবে রান্নায় খাওয়া যায়
  • কুমড়ো বড়ি যেকোনো নিরামিশ তরকারির সাথে খেতে পারবেন। যেমনঃ যেকোনো শাক, বাধাকপি, ফুলকপি কিংবা টমেটোর সাথে রান্না করে খেতে পারবেন।
  • যেকোনো ছোট মাছের সাথে রান্না করতে খেতে পারবেন এই বড়ি। বিশেষ করে নদীর ছোট টেংরা মাছ, ছোট পুটি কিংবা মৌরলি মাছের সাথে এই বড়ি খেতে বেশ মজাদার।
  • শুধু ছোট মাছ নয়, বরং যেকোনো বড় মাছের সাথেও আপনি এই কুমড় বড়ি রান্না করে খেতে পারবেন।
  • ধরুন বাসায় মাছ ,সবজি কিছুই নেই। সেক্ষেতেও আপনি এই কুমড়ো বড়ি ভুনা কিংবা ভর্তা করেও খেতে পারবেন। কুমড়ো বড়ির তৈরি ভর্তা এতোটাই মজাদার যে গরম ভাতের সাথে শুধু এই ভর্তা দিয়েই আপনি নিমিষে এক প্লেস ভাত খেয়ে নিতে পারবেন।

এছাড়া এটি আপনি মাঝে মাঝে রোদে দিয়ে দীর্ঘদিন সংরক্ষন করতে পারবেন। এমনকি এয়ার টাইট বক্সে রাখলে বা ফ্রিজে রাখলেও সারা বছর রেখে খেতে পারবেন।

কুমড়ো বড়ি যেভাবে রান্না করবেন

কুমড়ো বড়ির সঠিক টেস্ট আপনি তখন ই পাবেন যখন আপনি সঠিক নিয়মে এটি রান্না করতে জানবেন। তাই কুমড়ো বড়ির সঠিক টেস্ট পাওয়ার জণ্য প্রথমে একটি ফ্রাইপেনে হালকা আচে তেল সহ বড়ি গুলো ভেজে নিবেন। এরপর সাধারনত যেভাবে তরকারি রান্না করা হয়, সেইম প্রসেসেই রান্না করে নিতে হবে। রান্না শেষ হওয়ার ১০/১৫ মিনিট আগে ভেজে রাখা সেই কুমড়ো বড়ি তরকারির উপরে রেখে ফ্রাইপেনের ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ব্যাস ১৫ মিনিট পর রেডি আমাদের মজাদার কুমড়ো বড়ির তরকারি।

সেইম প্রসেসে আপনি বড়ির ভর্তা কিংবা ভুনা রেসিপি ও তৈরি করে নিতে পারবেন।

Bornali Akter Borno

Bornali Akter Borno is a passionate food enthusiast and entrepreneur. From an early age, her love for culinary exploration led her to experiment with flavors and ingredients, ultimately inspiring her to work with Binni Food, an e-commerce brand dedicated to offering premium quality Organic Food and delectable treats to food enthusiasts in Bangladesh. Bornali's relentless pursuit of flavor and commitment to excellence have earned her recognition in the culinary world. Her journey is a testament to the power of passion and perseverance, showcasing how dedication to one's craft can lead to entrepreneurial success and culinary innovation.