রসুই ঘরে থাকলে আটা, জমবে মজা পিঠের থালা। পিঠা কিংবা চালের আটার রুটি বাঙ্গালীদের পছন্দের খাবারের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন সঠিক আটা নির্বাচন না করলে আপনি কখনোই পার্ফেক্ট পিঠা তৈরি করতে পারবেন নাহ। বিশেষ করে যারা নতুন রাধুনি এবং শহরে বসাবস করেন তাদের জণ্য সঠিক পিঠার আটা নির্বাচন করা টা কিছুটা কষ্টস্বাধ্য। চলুন তবে আজ পার্ফেক্ট পিঠা তৈরির আটা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আটা তৈরীর জণ্য চাল নির্বাচন
পিঠা কিংবা রুটি তৈরির জন্য সবচেয়ে সেরা মানের আটা তৈরি করা হয় আতপ চালের আটা থেকে। অনেকেই এখন ভাবছেন আতপ চাল এবং সাধারন সেদ্ধ চালের মাঝে পার্থক্য কি? ধান সিদ্ধ করে সেই ধান শুকিয়ে যেই চাল তৈরি করা হয় এটি হলো সাধারন চাল, যা আমরা রেগুলার ভাত রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি।অণ্যদিকে সরাসরি ধান থেকে যেই চাল তৈরি হয় অর্থ্যাৎ ধান সিদ্ধ না করেই যেই চাল তৈরি হয় তাকে আতপ চাল বলা হয়। এক্ষেত্রে পোলাও চাল বা বাসমতি চাল ও কিন্তু আতপ চাল, কারন এগুলো সিদ্ধ না করেই ধান থেকে চাল তৈরি করা হয়।
আটা প্রস্তুত প্রণালি
সঠিক চাল নির্বাচনের পরে এবার আটা তৈরির প্রধান প্রসেস শুরু। শুরুতে আতপ চাল সংগ্রহ করে সেগুলো ১০/১৫ মিনিটের জন্য ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। কারন ভেজা চালের আটা দিয়ে যতটা সুন্দর পার্ফেক্ট পিঠা তৈরি করা হয় যায় , শুকনো চালের আটা দিয়ে এভাবে পিঠা তৈরি সম্ভব হয় নাহ। ভিজিয়ে রাখা চাল গুলো পানি ঝরানোর জণ্য একটি চালুনি বা স্ট্রেইনারে রাখা হয়। এবার একটি পরিষ্কার কাপড় অথবা পেপারে চালগুলো রেখে ফ্যানের নিচে রাখতে পারেন, আবার আপনার বাসায় যদি ছাদে কিংবা বেলকুনি তে পর্যাপ্ত রোদ থাকে তাহলে চালগুলো রোদে শুকাতে পারেন। ২/৩ ঘন্টার মাঝে দেখবেন চাল গুলো বেশ সুন্দর ভাবে শুকিয়ে গিয়েছে।
এইবার চালগুলোকে সনাতন পদ্ধতিতে ঢেকির মাধ্যমে গুড়ি করা হয়। অনেকে অবশ্য ব্লেন্ডার অথবা মেশিনের মাধ্যমেও চাল গুড়ি করে থাকেন। তবে আমরা চেয়েছি একদম পার্ফেক্ট চালের গুড়ি কাস্টমারের কাছে পৌছে দিতে। তাই প্রাচীন কালের সেই সনাতন পদ্ধতিতেই আমরা আস্থা রেখেছি। ঠিক এই কারনের আমরা নিজস্ব কর্মী দ্বারা ঢেকিতে এই আতপ চালের গুড়ি তৈরি করে থাকি। প্রায় ৩ টা স্তরে চাল গুলোকে গুড়ি করা হয় এবং চাল গুলোকে সুন্দর ভাবে স্ট্রেনার বা চালুনিতে ছেকে নেওয়া হয়। এভাবেই তৈরি হয় বিন্নি ফুডের মিহি আতপ চালের গুড়ি। এবার চালের গুড়ি গুলোকে কিছুক্ষন রোদে রেখে শুকিয়ে নেওয়া হয়।
আতপ চালের আটার ব্যবহার
যেহেতু আমাদের এই আতপ চালের আটা ভেজা চাল থেকে তৈরি করেছি তাই এই আটা ব্যবহার করে আপনি যেকোণো পিঠা তৈরি করতে পারবেন। অনেক সময় দেখা যায় শুকনো আটা দিয়ে শুধু মাত্র রুটি, ছিটারুটি কিংবা ম্যারা পিঠা তৈরি করা যায়। তবে বিন্নি ফুডের এই ভেজা চালের আটা দিয়ে আপনি রুটি, ভাপা পিঠা,, চিতই পিঠা, আন্দোসা পিঠা/ পাকান পিঠা, নারকেল পিঠা, রস পিঠা,মালপোয়া, নকশি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, পাটিসাপটা সহ অনান্য আরও অনেক ধরনের পিঠা তৈরি করা যায়। মোটকথা আপনি এই চালের আটা দিয়ে যেকোনো পিঠা তৈরি করতে পারবেন।
তবে চালের আটা দিয়ে পিঠা তৈরির পাশাপাশি এটি কিন্তু রুপচর্চা তেও ব্যবহৃত হয়-
- চালের আটা স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়,এক চা চামুচ চালের আটার সাথে সামান্য দুধ মিশিয়ে আপনি এটি স্ক্রাবার হিসেবে পুরো শরীরে ব্যবহার করতে পারবেন।
- চালের আটা, সামান্য মধু এবং টকদই মিশিয়ে ঘাড়ে এবং হাতের কনুই তে ব্যবহার করলে এটি ত্বকের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
আতপ চালের আটার কিছু গুনাবলী
- চালের আটা তে রয়েছে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং ফলিক এসিড যা আমাদের শরীরের জণ্য অনেক উপকারি।
- চালের আটা লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে। আপনি যদি ওজনের সমস্যায় ভুগে থাকেন , সেক্ষেত্রে চালের আটার রুটি বেশ উপকারি।
- গমের আটাতে গ্লুটেন( Gluten) নামক উপদান থাকে তাই অনেকেই গমের আটার তৈরি রুটি খেতে পারেন নাহ, তাদের জণ্য চালের আটার রূটি বেস্ট অপশন।
- চালের আটা তে রয়েছে ইনসলিউবেন ফাইবার , যা আমদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে।
- এছাড়াও চালের আটা তে রয়েছে জিংক, যা আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম মজবুত করে থাকে।
- চালের আটা তে থাকা কোলিন আমাদের শরীরের ব্যাড কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে
- চালের আটা আমাদের ত্বকের উজ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। ফেসপ্যাক হিসেবেও বহুল ব্যবহৃত এই চালের আটা।