You are currently viewing সুস্থ থাকার জন্য খাবারের তালিকা – সুস্থতার অর্গানিক সমাধান 
সুস্থ থাকার জন্য খাবারের তালিকা

সুস্থ থাকার জন্য খাবারের তালিকা – সুস্থতার অর্গানিক সমাধান 

সুস্থ থাকতে প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাবার। খাবার আমাদের শরীরে শক্তি জোগন দেয়। ফলে আমরা দৈনন্দিন কাজগুলো সুষ্টভাবে করতে সক্ষমতা লাভ করি। তবে সুস্থ  থাকতে শুধু খাবার খেলেই চলবে না। সঠিক নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার খেতে হবে। অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার বা ফাস্টফুড জাতীয় খাবার প্রতিদিন খেলে শরীরের ওজন বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন রোগ আমাদের শরীরের বাসা বাধতে পারে। এবং অসুস্থতা নিয়ে কোনো কাজই ভালোভাবে করা যায় না। 

স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকায় প্রতিদিনের খাবারের সঠিক পরিমাণে ক্যালরি রাখতে হবে। প্রতিদিনে আমরা যে পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করি তা পূরণের জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর খাদ্য। শরীরের চাহিদার তুলনায় কম খেলে ওজন কমবে। দীর্ঘসময় এমন চলতে থাকলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। ফলে খুব সহজে নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে পরবে। আবার প্রয়োজনের বেশি খাদ্য গ্রহনে ওজন বেড়ে যায়। তাই শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিতে খেতে হবে সব ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার। অর্থাৎ স্বাস্থ্যকম ব্যালেন্স ডায়েট রাখা জরুরী। 

সুস্থ থাকার জন্য খাবারের তালিকা 

সুস্থ থাকার জন্য খাবারের তালিকা 

আজকের আর্টিকেলে সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা নিয়ে আলোচনা করবো। বয়স, ওজন, চাহিদা ভেদে আমাদের খাদ্য তালিকা ভিন্ন হয়ে থাকে। যারা শিশু তাদের খাবারের তালিকা অবশ্যই একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষেরর থেকে আলাদা হবে। আবার যারা প্রাপ্ত বয়স্ত তাদের খাদ্য তালিকা বয়স্ক ব্যাক্তিদের থেকে একই রকম হবে না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন সুস্থ পুরুষকে প্রতিদিন ২৫০০গ্রাম ক্যালরি ও একজন নারীকে প্রতিদিন ২০০০গ্রাম ক্যালরি গ্রহন করা উচিত। 
নিরাপদ খাদ্য বলতে কি বোঝায়? নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব ও পুষ্টি

তৈলাক্ত মাছ ও সামুদ্রীক খাবার

প্রোটিনের একটি ভালো উৎস মাছ। এতে স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, মিনারেল ও ভিটামিন রয়েছে। স্ট্রোক, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে প্রচুর পরিমাণে মাছ খেতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা তৈলাক্ত মাছ খাওয়া পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এতে একজন ব্যক্তির হার্ট ও ব্রেইনকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। 

স্যালমন মাছ

তৈলাক্ত মাছের মধ্যে অন্যতম হলো স্যালমন মাছ। এটি অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। এতে ভিটামিন ডি, প্রোটিন, ওমেগা-৩ রয়েছে। 

সার্ডিনস মাছ 

এই মাছটি ছোট ও তৈলাক্ত। যা খাওয়ার ফলে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়ামসহ আরও অনেক পুষ্টি সরবরাহ থাকে। 

ট্রাউট মাছ 

এই মাছটি স্যামন মাছের মতো। এটি খুবই সুস্বাদু মিঠা পানির মাছ। এতেও অনেক ভিটামিন রয়েছে। 

টুনা মাছ 

টুনা মাছে প্রোটিনের পরিমাণটি বেশি থাকে এবং চর্বি ও ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। ফলে যারা ডায়েটে কম ক্যালরির প্রোটিন যোগ করতে চান তাদের জন্য ভালো একটি উপায়। 

ফলমূল 

স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে ফলমূল বেশ জনপ্রিয়। এগুলো খেতে বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ডাক্তাররাও বেশি বেশি ফলমূল খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণে এতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। যা আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। 

আপেল 

আপেল ভিটামিন সি, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এবং যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তারা নিয়মিত আপেল খেতে পারেন। এছাড়াও আমাদের হজম শক্তি দূর করতে সহায়ক। 

কলা 

এটি খুব সহজলভ্য ফল। পটাশিয়ামের খুব ভালো একটি উৎস। যা হার্টের পেশিগুলোকে ভালো রাখে। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইভার রয়েছে। এছাড়াও শর্করা, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন বি৬ বিদ্যমান। এটি আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকেলকে কমাতে সাহায্য করে।  

কমলালেবু 

খুবই পরিচিত একটি শীতকালিন ফল হলো কমলালেবু। আমরা সকলেই জানি এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধফল। ত্বককে সুন্দর রাখতে কমলালেবুর অবদান রয়েছে। এছাড়াও এতে বিদ্যমান পুষ্টিউপাদান আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে মজবুত করে। সুগার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও অবদার অনেক। 

অ্যাভোকাডো 

এটি অন্যান্য ফল থেকে আলাদা কারণ এতে স্বাস্থ্যকর চর্বি রয়েছে। সালাদ ড্রেসিং হিসেবে অ্যাভোকাডো অনন্য। এটি ক্রিমযুক্ত ও সুস্বাদু। এছাড়াও ভিটামিন সি, পটাসিয়াম ও ফাইবার রয়েছে। পেটের অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সহায়ক। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী। 

স্ট্রবেরি 

স্ট্রবেরি মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় অনেকেই পছন্দ করেন। বিশেষ করে এর ফ্লেভারটা দারুন। স্ট্রবেরি খাওয়ার অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ত্বকের লাবন্যতা বাড়ায়, মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের মস্তিষ্কের জন্য বেশ উপকারী। এতে খাওয়ার ফলে ভিটামিন সি, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ সরবরাহ করে থাকে। 
অর্গানিক ফুড কি? এর তালিকা এবং অর্গানিক ফুড বনাম নরমাল ফুড

আম 

আম সুপরিচিত ও জনপ্রিয় একটি ফল। এতে কম ক্যালোরিযুক্ত, উচ্চমানের ফাইবার ও ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি রয়েছে। খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলটি আমাদের স্বাস্থ্যের বেশ উপকারি। অন্যান্য স্বাস্থ্যকর ফল রয়েছে যেমন লেবু, তরমুজ, জলপাই, আনারস, বড়ই, আঙ্গুর ইত্যাদি। 

ডিম 

ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর ও প্রোটিনসমৃদ্ধ। ডিমের কুসুমে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন ও আয়রন রয়েছে। এটি হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটি ডিম রাখতে পারেন। 

শাকসবজি 

আমাদের প্রতিদনের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এতে ভিটামিন এ, ই, সি, খনিজ উপাদান যেমন ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। যা শরীরের ভিটামিন ও খনিজ লবনের চাহিদা পূরণে সহায়ক। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। 

গাজর

গাজর 

সাধারণত শীতকালে গাজর সবজি পাওয়া যায়। সালাদ, খিচুড়ি ও বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করা হয়। এতে খাবার দেখতে কালারফুল লাগে। খেতেও অনেক মজাদার। এমনকি গাজর দিয়ে ডেজার্ট আইটেমও তৈরি করা হয়। গাজরে ফাইবার, ভিটামিন কে, ক্যারোটিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো পুষ্টিতে ভরপুর। 

 শসা 

রিফ্রেশিং একটি সবজি হলো শসা। বিশেষ করে গরমের সময় আমাদের জন্য বেশ উপকারি। এটি সালাদেও ব্যবহার করা হয়। এতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম। ওজন কমাতে শসার বেশ অবদান রয়েছে। 

টমেটো 

রান্নায় অতিরিক্ত স্বাদের জন্য টমেটো ব্যবহার করা হয়। এটি খেতে অনেক সুস্বাদু। এতে পটাসিয়াম ও ভিটামিন সি রয়েছে। 

রসুন ও পেয়াজ 

তরকারি রান্নায় এই রসুন ও পেয়াজ ছাড়া যেনো তরকারির স্বাদ অসম্পূর্ণ্ রয়ে যায়। কিন্তু অনেকে হয়তো পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অবগত নয়। এতে বিদ্যমান পুষ্টিগুণ ক্যান্সার ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে সাাহায্য করে। 

ফুলকপি 

তরকারিতে ফুলকপি যোগ করলে রান্নার স্বাদ যেমন দ্বিগুণ বেড়ে যায় তেমনি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য রয়েছে উপকারীতা। শীতকালে এই সবজি বেশ জনপ্রিয়। আরও স্বাস্যকর সবজি উল্লেখযোগ্য হলো বেগুণ, মুলা, ব্রকলি, বাধাঁকপি ইত্যাদি। 

ব্রাউন রাইস 

আমাদের প্রধান খাদ্য হলো ভাত। সাধারণত সাদা ভাত খেতে আমরা অভ্যস্ত। তবে সাদা ভাতের চেয়ে ব্রাউন রাইস বেশি পুষ্টিকর। এতে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি১ রয়েছে। 

বাদাম ও বীজ 

আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বা অসম্পৃক্ত চর্বি এবং ক্যালোরির পরিমাণ বেশি থাকে। আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশ উপকারী। বাদাম ও বীজ ক্যান্সার ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে। এমনকি ওজন কমাতেও অবদান রয়েছে। 

চিয়া বীজ

সুপার ফুডের তালিকায় রয়েছে চিয়া বীজ। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ওমেগা-৩ রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সাথে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি থাকে যা আমাদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। 

আখরোট 

অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ফাইবারে ভরপুর। এটি  বিভিন্ন ভিটমিন ও খনিজ সরবরাহ করে থাকে। আখরোট মধুর সাথে খেতে বেশ সুস্বাদু। 

কাঠবাদাম

কাঠবাদামকে ইংরেজিতে আমন্ড বলা হয়। এতে প্রচুর ভিটামিন ই ও ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে যা স্তন ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি আমাদের শরীকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। 

চর্বিহীন মাংস 

এটি একটি প্রোটিনের চমৎকার উৎস। তবে পরিমিত পরিমাণে মাংস খেতে হবে। এতে সুফল পাওয়া যায়। ওজন ঠিক রাখতে বেশ কার্যকরী। 

উপরোক্ত আলোচনায় সুস্থ থাকতে খাবারের একটি তালিকা দেওয়া হলো। পছন্দ অনুযায়ী এই খাদ্যগুলো আপনার খাদ্য তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করতে পারবেন। তবে খাবারগুলো অবশই নির্দিষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। কারণ যেকোনো খাবার অতিরিক্ত গ্রহণে হিতে বিপরীতের আশংক্ষা রয়েছে। 

Bornali Akter Borno

Bornali Akter Borno is a passionate food enthusiast and entrepreneur. From an early age, her love for culinary exploration led her to experiment with flavors and ingredients, ultimately inspiring her to work with Binni Food, an e-commerce brand dedicated to offering premium quality Organic Food and delectable treats to food enthusiasts in Bangladesh. Bornali's relentless pursuit of flavor and commitment to excellence have earned her recognition in the culinary world. Her journey is a testament to the power of passion and perseverance, showcasing how dedication to one's craft can lead to entrepreneurial success and culinary innovation.