You are currently viewing বগুড়ার বিখ্যাত দই এর ইতিহাস, তৈরির নিয়ম এবং খাওয়ার উপকারিতা

বগুড়ার বিখ্যাত দই এর ইতিহাস, তৈরির নিয়ম এবং খাওয়ার উপকারিতা

বাঙ্গালীদের কাছে দই এর কদর বরাবরই অনেক বেশি , কিন্তু কেন?
বাঙালি মানেই খাদ্যপ্রিয়। বাঙালি যে শুধুই নিজস্ব  খাবার পছন্দ করে তা কিন্তু নয়, সারা পৃথিবীর বিভিন্ন বিখ্যাত খাবার যায়গা পেয়েছেন  বাঙ্গালিদের খাবারের তালিকায়। তবে বাঙালিদের অতি প্রিয় খাবারের মাঝে প্রথম সারিতে রয়েছে মিষ্টি খাবার ।  আর  মিষ্টির সাথে দই ছাড়া কি জমে? 

দই কেন বাঙ্গালীদের এতোটা পছন্দের খাবার এটির সঠিক ঊত্তর হয়তো কেউ ই জানেন নাহ। তবে দই এবং মিষ্টি বাঙ্গালিদের কাছে পরম পছন্দের খাবার সেই সাথে আতিথিয়তার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত! দই এর দোকানে মিষ্টি, এবং মিষ্টির দোকানে দই এর যেনো এক নির্বিরোধ সহবস্থান। বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে  অনেকের দৈনিক খাবারের তালিকায় রয়েছে এই দই। খাবারের শেষ পাতে দই না হলে যেনো শরীরের সাথে সাথে মনের ও একটা উশখুশ!  তাই আজকের এই ব্লগে আপনাদের আমি জানাবো মজাদার দই এর ইতিবৃত্তি।

দই কী?

দই কী?

দই বা দধি হলো ব্যাকটেরিয়া হয়ে গাজন পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা একটি মিষ্টি  দুগ্ধজাত খাবার। এই দই কিন্তু দধি, মোসারু, থাইর বা পেরুগু নামেও  পরিচিত। সাধারনত গরুর দুধ থেকেই তৈরি হয় এই মজাদার  দই। তবে চাহিদা বা পছন্দ ভেদে মহিষের দুধ অথবা ছাগলের দুধ থেকেও দই তৈরি করা যায়। মুলত দই তৈরির মূল উপাদান ই হলো দুধ। তাই দুধের নামের সাথে সামঞ্জস্ব্য রেখেই এই খাবার টির নাম রাখা হয়েছে দই। 

দই তৈরির মূল প্রক্রিয়াটা কিন্তু ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে দুধের ফার্মান্টেশন বা গাঁজন এর মাধ্যমে। তবে দই তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ল্যাকটোব্যাসিলাস, স্ট্রেপটোকক্কাস  এবং বুলগেরিকাস এর মতো উপকারি ব্যাকটেরিয়া। অনেক ব্যাকটেরিয়া আছে যেগুলো আমাদের শরিরের জন্য ক্ষতিকত। কিন্তু দই এ থাকা ব্যাকটেরিয়া হলো প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া, যা আমাদের শরীরের জণ্য উপকারি। এটি আমাদের হজমের সাহায্য করে, শরীর কে শীতল রাখতে সাহায্য করে।

দই এর ইতিহাস  এবং সারা বিশ্বে এটির জনপ্রিয়তা

দই ভারতীয় উপমহাদেশে খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার জণ্য অনেকেই ধারনা করেন এটির উৎপত্তি স্থল হয়তো এই ভারতীয় মহাদেশেই। তবে নাহ!  দই আমাদের দেশে জনপ্রিয় খাবার হলেও এটি কিন্তু আমাদের নিজস্ব বা দেশীয় খাবার না। ধারনা করা হয় দঈ এর ইতিহাস প্রায়  চার হাজার বছর পূর্বের। বিভিন্ন জার্নাল থেকে পাওয়া সূত্র মতে, সুমেরিয় বা আক্কাদিয় যাযাবর নোম্যডিক জাতির হাত ধরেই দই এর উৎপত্তি। এই যাযাবর জাতিরা প্রানীর চামড়া দিয়ে বানানো থালি/ পাত্রে দুধ সংগ্রহ করতো। প্রাণীর চামড়া কিন্তু ব্যাকটেরিয়া তৈরির আদর্শ পরিবেশ। এর ফলে ব্যাকটেরিয়ার সাহায্য গাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুধ জমে দই তে পরিনত হতো।

অবশ্য দই তৈরির মূল রহস্য ঊন্মোচন হয়েছিল ১৯০৪ সালে।  ডাঃ স্টামেন গ্রিগোরভ দীর্ঘ সময় পরিক্ষা নিরিক্ষার পর অবশেষে জানান দেয় যে দুধ কীভাবে ফার্মান্টেশন আব  গাঁজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে  দই এ পরিনত হয় এবং এর দই তৈরিতে কোণ কোণ ব্যাকটেরিয়া ব্যবহৃত হয়।  ডাঃ স্টামেন গ্রিগোরভ ছিলেন বুলগেরিয়ার নাগরিক। মূলত পৃথিবীকে দই চেনানো দেশ টি হলো বুলগেরিয়া। আর ঠিক এই কারনেই দই তৈরিতে ব্যবহৃত প্রধান ব্যাকটেরিয়ার নামের সাথে বুলগেরিয়ার নাম যুক্ত করে নাম করন হয়েছিলো “ ল্যাকটোব্যাসিলাস বুলগেরিকু”। এভাবেই বুলগেরিয়ার হাত ধরে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এই দই।

জি আই (GI) পন্য হিসেবে বগুড়ার দই

জি আই (GI) পন্য হিসেবে বগুড়ার দই

জি আই এর পূর্নরূপ হলো Geographical indication। জি আই বলতে ভৌগোলিক নির্দেশক বা চিহ্ন কে বোঝানো হয়ে থাকে। আর জি আই পন্য কে স্বীকৃতি দানকারী প্রতিষ্ঠান হলো WIPO (world intellectual property organization)। কোনো পন্য যখন একটি নির্দিষ্ট  উৎপত্তিস্থলের কারনে এর খ্যাতি বা গুনাবলি অর্জন করে তখন সেটি জি আই এর অন্তর্ভুক্ত থাকে। কোনো পন্য জি আই স্বীকৃতির ফলে সেই পণ্যের বানিজ্যিকরনে সুবিধা হয় এর ফলে পণ্যটি বাহিরের দেশে পাঠানো হলে এর দাম এবং মান নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা লাভ করা সম্ভব হয়। ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে জি আই পণ্য এর সংখ্যা মাত্র ১১ টি। ২০২৩ এর ২৬ শে জুন বগুড়ার দই কে জি আই পণ্য হিসেবে চুড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে দই

কুটনৈতিক সম্পর্কে দই? কী শুনতেই অবাক লাগছে? অবাক হলেও এটাই সত্যি।বগুড়ার দইয়ের জনপ্রিয়তা এতো বেশি যে বিভিন্ন দেশের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেও  এই দইয়ের ব্যবহার হয়ে আসছে। এই যেমন ধরুন ভারতের সাথে সম্পর্কে স্থাপনে কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায় প্রতিবছর ভারতে ইলিশ পাঠিয়ে থাকেন। আবার জনপ্রিয় এক জার্নালের মতে, সম্প্রতি পাকিস্থানের প্রেসিডেন্টের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কে স্থাপনে প্রধানমন্ত্রি বিখ্যাত আম উপহার হিসেবে পাঠিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের মাঝে এমন বিখ্যাত  জিনিষ সমূহ উপহার হিসেবে আদান প্রদান করার প্রচলন কিন্তু সেই প্রাচীন কাল থেকেই। যেমন দেশ ভাগের পূর্বে পাকিস্থানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান  বগুড়ার এই বিখ্যাত দই ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের নিকট উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। এমনকি  ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ ও এই বগুড়ার দইয়ের স্বাদে মুগ্ধ ছিলেন।  মূলত আইয়ুব খানের হাত ধরেই সারা বিশ্বে বগুড়ার দই এর পরিচিতি লাভ করেছে।

বিদেশের মাটিতে  বিখ্যাত বগুড়ার দই এর চাহিদা

 ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্টে আইয়ুব খানের মাধ্যমেই দই  খ্যাতি লাভ করে।
তবে ১৯৩৮ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে সর্বপ্রথম দই এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালিন বাংলার বৃটিশ গভর্নর স্যার জন এন্ডারশন বগুড়ার নবানবাড়ি বেড়াতে এসে এই দই এর স্বাদ গ্রহন করে, এবং এই দই তার এতোটায় পছন্দ হয় যে উনি পরবর্তিতে ইংল্যান্ডে এই দই নেওয়ার পরিকল্পনা করেন।  বগুড়ার দই এর কদর আমাদের পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতেও কম নাহ। ২০২১ সালে ভারতের জলপায়গুড়ি জেলার চেম্বার কর্মকর্তাদের মাঝে বগুড়ার এই দই নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। সেই সময়ে বানিজ্যমেলায় এই দইয়ের কদর এতোটাই বেশী  ছিলো যে , তারা বগুড়া থেকে ১০ মেট্রিক টন মানে ছয়শো গ্রাম ওজনের টোটাল ১৭ হাজার দইয়ের সরা সরবরাহ করার জণ্য অনুরোধ করেন। অবশ্য এতো অল্প সময়ে এতো বেশী দঈ পাঠানো সম্ভব হয় নি, কিন্তু পরবর্তি বানিজ্য মেলায় পরীক্ষামুলক ভাবে প্রায় ৫শ কেজি বগুড়ার দই পাঠানো হয়েছিলো। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সে বছর মেলায় এই দই এর জন্য মানূষ পিপড়ার মতো লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিলো। এখান থেকেই বোঝা যায় ভারতেও এই দইয়ের কদর ঠিক কতখানি।

ব্রিটেন , মার্কিন যুক্তরাষ্ট ছাড়াও ভারত, আফগানিস্থান, নেপাল, ভুটান মালদ্বিপ এবং পাকিস্থানেও রয়েছে এই মজাদার বগুড়া দইয়ের সুখ্যাতি।

এতো দই এর মাঝে বগুড়ার দই-ই কেন সেরা?

সত্যিই তো। বাংলাদেশের প্রায় সকল স্থানেই কমবেশী দই তৈরি হয়। তাহলে শুধু বগুড়ার দই টাই কেন এতো বিখ্যাত?  বগুড়ার দই য়ে কি তাহলে দুধের সাথে আলাদা কোনো সিক্রেট উপাদান আছে?

কোনো অঞ্চলের বিখ্যাত খাবার সেই এলাকার সাথে সামগ্রিকভাবে যুক্ত।  এমনকি  ঐতিহ্যের ও অংশ বটে! ঠিক তেমনি হলো এই বগুড়ার দই । বিখ্যাত কিছু দই কারিগরদের মতে, আবহাওয়া, পরিবেশ,, গবাদিপশুর খাবার এবং কিছু গুপ্ত রেসিপিই হলো এই মজাদার  দই তৈরির  আসল রহস্য।  এছাড়া  বগুড়ার দই তৈরিতে প্রতিটি পর্যায়ে বিশেষ পদ্ধতি অনুসরন করা হয় এবং মান নিয়ন্ত্রনেও বগুড়ার দই কারিগর রাই সেরা।
মূলত বগুড়াতে দই বানিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছিলো ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকেই। কিন্তু  দেশ ভাগের পূর্বেও  সেই মোঘল আমলের শেষ , এবং  ব্রিটিশ আমলের সূচনা লগ্ন থেকেই কিন্তু এই দই বেশ জনপ্রিয় ছিলো। এমনকি ষাটের দশকের প্রথম দিকে ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ থেকে শুরু করে মার্কিন মুল্লুকেও খ্যাতি ছড়িয়েছে এই দই।

বগুড়ার দই তৈরির গুপ্ত রেসিপি  নিজের হেফাজতে রেখেছিলেন ঘেটু ঘোষ নামের একজন গোয়ালা। পরবর্তিতে তার অবর্তমানে তার উত্তরসূরী দের মাধ্যমেই খ্যাতি ছড়ায় এই দই।

বগুড়ার সেরা দই এর আদি নিবাস

বগুড়ার সেরা দই এর আদি নিবাস

দই এর আদিনিবাস যেমন বাংলাদেশে নয়, ঠিক তেমনি বগুড়ার বিখ্যাত দই এর আদিনিবাস ও একেবারে বগুড়াতে নয়। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ২০ কি.মি. দক্ষিণে বগুড়া-ঢাকা জাতীয় মহাসড়ক সংলগ্ন করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে প্রসিদ্ধ ও সুপ্রাচীন শহর হলো শেরপুর। এই শেরপুরেই প্রায় দেড়শ বছর আগে থেকে দই তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়।স্থানীয় দের মতে সনাতন হিন্দু ঘোষ পরিবারের মাধ্যমেই সূচনা হয় এই দঈ তৈরির এবং পরবর্তিতে তাদের মাধ্যমেই সারা দেশে ব্যাপক সারা ফেলে এই বগুড়ার দই। ঘেটু ঘোষের মাধ্যমে এই দই তৈরি শূরু হলেও পরবর্তিতে তার উত্তরসূরী রা এই দই তৈরি করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ  করতো।

জানা যায় , দেশ ভাগের পূর্বে গৌর গোপাল ঘোষ নামের এক ব্যাক্তি নিয়মিত শেরপুরে দই তৈরি করতেন এবং তারপর তিনি সেই দই নিয়মিত বগুড়া সদরে এসে বিক্রি করতেন। এভাবেই একটা সময় ক্রমশই বাংলার মানূষের কাছে দইয়ের জনপ্রিয়তা তৈরি হয়। গৌর গোপালের দইয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ার ফলে একটা সময় তিনি বগুড়াতেই নিজস্ব ভাবে দইয়ের কারখানা তৈরি করেন। এসময় তার কারখানা তে কাজ করা অনেক শ্রমিক দই তৈরির সেই গুপ্ত রেসিপি জেনে নিয়ে নিজস্ব ভাবে দই তৈরি শুরু করেন। এতে করে সেই সময় ব্যাপক হারে দইয়ের বানিজ্যিক প্রসার শুরু হয়।

একটা সময় হিন্দু ঘোষ পরিবারের সদস্য রাই ছিলো এই দই তৈরির মূল কারিগর, যদিও সময়ের বিবর্তনে একটা সময় মুসলিম কারিগর রাও ব্যাপক হারে এই দই তৈরি শুরু করেন। যেমন ৬০ এর দশকে বগুড়ার মহরম আলী, এবং মহাস্থানের গোকুলে মোঃ রফাতুল্লাহ সরকার দই মিষ্টি তৈরিতে ব্যাপক সাড়া ফেলেন।  সত্তর এর দশকে বগুড়ার  বিখ্যাত গীতিকার এবং সুরকার দই নিয়ে একটি গান রচনা করেন। গানের কথা ছিলো “গোবরা তুই খ্যায়া যা শেরপুরের দই, পাঁচ শিকা আছলো এখন পাঁচ টেকায় লই।” এই গানের পিছনে অবশ্য একটা ইতিহাস রয়েছে, মুলত ষাটের দশকে হুট করে সকল দ্রব্য মূল্য এর দাম বেড়ে যায়। তখন বিখ্যাত শেরপুরের দই এর দাম টাও ১ টাকা ২৫ পয়সা থেকে বেড়ে ৫ টাকাতে বিক্রি হওয়া শুরু হয়।

দই তৈরির পদ্ধতি

দই তৈরির পদ্ধতি

দই তৈরিতে মূলত ব্যবহার করা হয় দুধ, চিনি, মাটির সরা বা কাপ। তবে পার্ফেক্ট দই তৈরির সাথে আবহাওয়ার একটা যোগসাজেস আছে। এছাড়া বগুড়ার দই কারিগর রা অত্যান্ত দক্ষতার সাথে দই তৈরি করে থাকে। দুধের ঘনত্ব,চিনি এবং দুধের সঠিক মাত্রার ব্যবহার, কারিগরি দক্ষতার উপরেও দইয়ের স্বাদ নির্ভর করে। মূলত একটি বড় পাত্রে প্রায় ৫/৬ ঘন্টা  দুধ এবং চিনি জ্বাল দিয়ে তা ঘন হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে মাটির সরা বা কাপে সারা রাতের জণ্য রেখে দেওয়া হয়। সারা রাত ঢেকে রাখার ফলে গাজন পদ্ধতির মাধ্যমে দই তৈরি হয়ে যায়। ১৬ মন দুধ জ্বাল দিয়ে প্রায় ৪৫০ সরা দই তৈরি সম্ভব বলে কারিগররা মনে করেন।

দই কত প্রকার ও কী কী?

তৈরি পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে   দই এর কিন্তু অনেক প্রকারভেদ রয়েছে।
মিষ্টি দইঃ দই বলতে সবাই এই মিষ্টি দই কেই বুঝে থাকেন। এটি বাজারে সর্বাধিক বিক্রি হয়ে থাকে এবং সকলের ই বেশ পছন্দ।
শাহী দইঃ শাহী দই হলো মিষ্টি দইয়ের আধুনিক সংস্করন। মিষ্টি দইয়ের মাঝে সবচেয়ে স্পেশাল ভাবে তৈরি করা দই হলো শাহী দই।
সাদা দইঃ সাদা দই হলো মিষ্টি ছাড়া দই। এটা মূলত ডায়েবেটিকস রোগীরা খেয়ে থাকেন, অথবা যারা মিষ্টি কম পছন্দ করেন তারা এই দই খেয়ে থাকেন।
টক দইঃ সাদা দই এবং টক দই কিছুটা এঈ ধাচের। টক দই তেও কোনো মিষ্টি ব্যবহার করা হয় নাহ।
ঘোল দইঃ সাধারন মিষ্টি দই কে পাতলা করে ঘোল দই তৈরি করা হয়।

বগুড়ার কোণ দই গুনে মানে সেরা

বগুড়া হলো দইয়ের রাজধানি। শুধু মাত্র শেরপুরেই এই দই তৈরি কেন্দ্র করে ছোট বড় প্রায় ৬ হাজার দুগ্ধ খামার গড়ে ঊঠেছে, বগুরাতে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার দইয়ের ব্যবসা হয়ে থাকে।তবে বিক্রি হওয়া এসকল দই কিন্তু একই স্বাদ বা মানের না। স্বাদ এবং মান বিবেচনায় বগুড়ার সেরা দই প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হলো এশিয়া সুইটস, গ্যান্ড আকবরিয়া হোটেল, মহরম আলী দই ঘর, রফাত দই ঘর,চিনিপাতা দই, শেরপুর দই ঘর, শম্পা দধি ভান্ডার,সাউদিয়া ইত্যাদি। শেরপুরের এবং বগুড়ার নামি দামি হোটেল বা দই ঘরের পাশাপাশি এখন সোনাতলার চরপাড়া, সারিয়াকান্দি এর কামালপুরেও বেশ ভালো মানের দই তৈরি করা হয়।

তবে বগুড়া শহরে দই প্রস্তুতকারক দুইটি প্রাচীন প্রতিষ্ঠান হলো – গৌরিগোপাল দধি ভান্ডার এবং রুচিতা দই ঘর। তাই গুনে মানে সেরা এসব দই খেতে চাইলে দই এর রাজধানী তে আপনাকে স্বাগতম!

Bornali Akter Borno

Bornali Akter Borno is a passionate food enthusiast and entrepreneur. From an early age, her love for culinary exploration led her to experiment with flavors and ingredients, ultimately inspiring her to work with Binni Food, an e-commerce brand dedicated to offering premium quality Organic Food and delectable treats to food enthusiasts in Bangladesh. Bornali's relentless pursuit of flavor and commitment to excellence have earned her recognition in the culinary world. Her journey is a testament to the power of passion and perseverance, showcasing how dedication to one's craft can lead to entrepreneurial success and culinary innovation.